বেসরকারি স্কুলেও বাধ্যতামূলক বাংলা ভাষা, রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা হলো নতুন নির্দেশিকা।

Advertisement

বাংলা ভাষা নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করলো পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার, আর রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা এই নির্দেশিকাই বর্তমানে সমগ্র দেশ তথা পশ্চিমবঙ্গ সাধারণ নাগরিকদের চর্চার মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সূত্রের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে সমগ্র রাজ্যব্যাপী বাংলাকে আরও বেশি করে প্রাধান্য দিতে এবং প্রাসঙ্গিক করে তুলতে রাজ্য সরকারের তরফে এবারে এক নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে। আর এই নতুন নিয়মে সমগ্র বাংলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবস্থিত বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বাধ্যতামূলকভাবে রাজ্যের সমস্ত স্কুলগুলির ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলা পঠন পাঠন চালিয়ে যেতে হবে, এমনকি এক্ষেত্রে কোনভাবেই বাদ পড়বে না বেসরকারি স্কুলগুলিও, এমনটাই জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে। বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্রের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, বাংলা মাধ্যম নয় এইরূপ স্কুলগুলিতে দ্বিতীয় ভাষা অথবা তৃতীয় ভাষা হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলা পড়াতে হবে, এই মর্মে নতুন বিল আনতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুলগুলিতে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে বাংলা পড়ানো হলেও রাজ্যের এমন বহু বেসরকারি স্কুল রয়েছে যে সমস্ত স্কুলে পড়াশোনার মূল মাধ্যম ইংরেজি ভাষা। এমনকি এইসকল স্কুল গুলিতে দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় ভাষা হিসেবেও বাংলাকে স্থান দেওয়া হয় না, ফলত বহু ছাত্র-ছাত্রী নিজের মাতৃভাষা সম্পর্কে অবগত নয়। আর সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়, যার জেরে বাংলা ভাষার সুদিন ফিরিয়ে আনতে এই নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে।

Advertisement

আরও পড়ুন:- ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য কোনটি? জেনে নিন।

বিভিন্ন সূত্রের দাবি অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বাস্থ্য কমিশনের ধাঁচে শিক্ষা কমিশন তৈরি করার প্রস্তাব পাস করা হলেও রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে বাংলা আবশ্যিক করার নিয়ম এখনই কার্যকর করা হচ্ছে না। যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যের প্রতিটি স্কুলে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে বাংলা পড়ানোর ক্ষেত্রে নতুন বিল পাস করা হবে, এমনটাই জানা গিয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে। মূলত রাজ্যে বর্তমানে যে সমস্ত ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলি রয়েছে তাতে বাংলা ভাষাকে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষা হিসেবে স্থান দেওয়ার জন্যই এই বিল কার্যকর করা হবে। অন্যদিকে, রাজ্যের যেকোনো বোর্ডের অধীনস্থ নতুন ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়গুলিকে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাকে দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় ভাষা রূপে কার্যকর করার শর্ত জারি করা হয়েছে।

নতুন শিক্ষানীতির কারণেই রাজ্য সরকারের তরফে এইরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলেই মনে করছেন শিক্ষামহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। রাজ্য সরকারের তরফে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সমগ্র রাজ্যের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষা মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এমনকি রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিক্ষক, অধ্যাপক, লেখক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যেও যথেষ্ট শোরগোল ফেলেছে। অধ্যাপক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী থেকে শুরু করে সংগীতশিল্পী চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, অধ্যাপক আবদুল কাফি, অধ্যাপক মানবী বন্দোপাধ্যায় সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের কাছেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে।

Advertisement