অলসতার কারণে কোন কাজ করা হয়ে উঠছে না? অলসতা দূর করার পদ্ধতিগুলি জেনে নিন।

Advertisement

সময় যত এগিয়েছে আমাদের চারপাশের পৃথিবীও ততই দ্রুত গতিসম্পন্ন হয়ে উঠেছে। যার ফলে মানুষও নানা ধরনের যন্ত্র আবিষ্কার করেছে যা তাকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন কাজের সহায়ক যন্ত্র আবিষ্কার করলেও মানুষ ক্রমান্বয়ে অলস হয়ে পড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় মানুষ এতটাই অলস হয়ে পড়েছে যে, প্রয়োজনে যেকোনো কাজের জন্য বাড়ি থেকেও বেরোতে পারেন না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই অলসতার কারণে মানুষ এমন কিছু কাজ ফেলে রাখেন যার কারণে তাকে বারংবার নানা ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে হয় এবং পরবর্তীতে সেই কাজটি সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে যথেষ্ট হয়রানির শিকার হতে হয়। আর এই সমস্ত সমস্যার কারণেই প্রতিনিয়ত প্রচুর মানুষ অলসতা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে থাকেন। আর তাই আজকের এই পোস্টে আমরা অলসতা থেকে মুক্তি পাবার বেশ কতগুলো উপায় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।

কি কি উপায়ে আপনারা অলসতা থেকে মুক্তি পাবেন:-

বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কতগুলি ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তন এবং জীবনযাপনের মান উন্নত করার মধ্যে দিয়েই আমরা নিজেদের অলসতা থেকে মুক্তি পেতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদের যে যে অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে তা হলো:

Advertisement

১. প্রতিদিন সকালে যোগ ব্যায়াম করুন:-

অলসতা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিনের যোগ ব্যায়ামের জুড়ি মেলা ভার। প্রতিদিন সকালে নির্দিষ্ট সময় উঠে যোগ ব্যায়াম করলে যেকোনো ব্যক্তির মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকে। শারীরিক অসুস্থতা এবং মানসিক অস্থিরতার কারণে প্রচুর মানুষ কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না, যার কারণে মানুষ ধীরে ধীরে অলস হয়ে পড়তে থাকেন। কিন্তু যোগ ব্যায়ামের ফলে যেকোনো ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকবে ফলত তিনি সুষ্ঠুভাবে নিজের কাজগুলি সম্পন্ন করতে পারবেন এবং অলসতা দূর করতে পারবেন। এছাড়াও প্রতিদিন কিছুটা সময় সবুজ সতেজ প্রাকৃতিক পরিবেশে কাটানো এবং প্রকৃতির মাঝে হেঁটে বেড়ানোর মাধ্যমে অলসতা দূর করা সম্ভব। যে সমস্ত ব্যক্তিরা প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করার সময় সুযোগ পান না তারা পার্কে কিংবা কোন মাঠে অথবা নিজের বাড়ির বাগানে বেশ খানিকটা সময় হাঁটার মাধ্যমেও শরীরচর্চা শুরু করতে পারেন।

২. মানসিক চাপ কম করুন:-

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় অতিরিক্ত কাজের কারণে যেকোনো ব্যক্তির মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় এবং এই মানসিক চাপের ফলেই কাজের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়। তাই যতটা সম্ভব মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকলে প্রথমেই প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আপনার কাজগুলির একটি তালিকা করে নিন এবং তারপর সেই তালিকা অনুসারে কাজগুলিকে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন। এর ফলে একদিকে যেমন কাজগুলি যথা সময় সম্পন্ন হবে অন্যদিকে ঠিক তেমনভাবেই অতিরিক্ত মানসিক চাপও কমবে। আর মানসিক চাপ কমলে কাজের প্রতি অনীহা কমবে এবং অলসতাও দূর হবে।

Advertisement

৩. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং কাজের তালিকা তৈরি করার চেষ্টা করুন:-

পড়াশোনা হোক বা অফিসের কাজ অথবা জীবনের বিভিন্ন ইচ্ছা পূরণ সমস্ত ক্ষেত্রেই লক্ষ্য নির্ধারণ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অলসতা দূর করার জন্য আপনাকে প্রথমেই আপনি সারাদিন কি কি কাজ করতে চলেছেন তার একটি নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করে নিতে হবে এবং পরবর্তীতে মনোযোগ সহকারে এই কাজের তালিকা অনুসারে কাজগুলি এক এক করে সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়াও আপনি কি কি কাজ করতে চাইছেন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিতে পারেন। এই সমস্ত ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণের মধ্যে দিয়ে যেমন কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়, ঠিক তেমনভাবেই কাজ করার প্রবণতাও বৃদ্ধি পায়। আর কাজের প্রতি আগ্রহ এবং ভালোবাসা জন্মালেই অলসতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুন:- আজই নিজের মুদিখানা ব্যবসা শুরু করুন এবং প্রত্যেক মাসে ৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নিন।

৪. প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৬ ঘন্টা ঘুম অবশ্য প্রয়োজনীয়:-

সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৬ ঘন্টার ঘুম প্রয়োজন। আর প্রতিদিনের ৬ ঘন্টার ঘুম পূরণ করার জন্য প্রত্যেকদিন রাতে একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমানো এবং প্রতিদিন সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ওঠা অবশ্য প্রয়োজনীয়। যে সমস্ত ব্যক্তিরা প্রতিদিন রাতে নির্দিষ্ট সময় মতো ঘুমান না এবং ৬ ঘন্টার ঘুম পূরণ না করেই প্রতিদিন সকালে নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে উঠে যান তাদের ক্ষেত্রে ঘুমের অভাবে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়। এমনকি ঘুমের অভাবে সারাদিন একটি ঘুম ঘুম ভাব ওই সমস্ত ব্যক্তিকে ঘিরে থাকে। এর ফলে কোন কাজই সঠিকভাবে করা হয়ে ওঠে না এবং যেকোনো ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে অলসতা দেখা দেয়। এর পাশাপাশি আরো জানিয়ে রাখি যে, সমস্ত ব্যক্তিরা দুপুরে ঘুমিয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে রাতে ঘুমানোর সময় নানারকম অসুবিধা সৃষ্টি হয়। এমনকি রাতে সহজে ঘুম আসতেও চায়না। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। এক্ষেত্রে পাওয়ার ন্যাপ নিতে পারেন যা আপনাকে কাজ করায় উৎসাহিত করবে।

৫. অলসতা থেকে মুক্তি পেতে ভেষজ চা এবং গ্রিন টি:-

সমগ্র ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের জীবনে চা একটি অপরিহার্য অঙ্গ। তবে অলসতা থেকে মুক্তি পেতে সাধারণ চায়ের বদলে ভেষজ চা এবং গ্রিন টি খেতে পারেন। ভেষজ চা এবং গ্রিন টিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার শরীরকে সতেজ করতে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করে তুলতে সাহায্য করে। যার ফলে স্বভাবতই অলসতা কমে।

৬. কাজের মধ্যে লাভ খুঁজে বার করুন এবং নিজেকে পুরস্কৃত করুন:-

অলসতার কারণে আপনি যে সমস্ত কাজগুলিকে ফেলে রেখেছেন সেই সমস্ত কাজগুলি থেকে আপনি কি কি উপকার পেতে পারেন তা খুঁজে বার করুন এবং প্রতিদিনকার কাজের মাঝে মাঝে সেই সমস্ত কাজগুলিকে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন। এর ফলে একদিকে যেমন কাজগুলি শেষ হবে অন্যদিকে তেমনভাবেই আপনিও লাভবান হবেন। নিজেকে কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার পরই নিজেকে উৎসাহিত করার জন্য নিজের জন্যই বেশ কিছু গিফট কিনতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি নিজেকে নিজের পছন্দ সই খাবার কিংবা সফট টয়, যেকোনো প্রয়োজনীয় জিনিস, বই সহ আপনার পছন্দের যেকোনো জিনিস গিফট করতে পারেন। এর ফলে কাজের প্রতি উৎসাহ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি কাজের প্রতি ভালোবাসা জন্মাবে এবং অলসতা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।